অস্বাভাবিক চুল পড়তে থাকলে তার দ্রুত সমাধান দরকার। কারণ যে কারণেই চুল পড়ুক না কেন, নিয়মিত সঠিক উপায়ে যত্ন নিলে চুল ঘন হবেই। সেইসঙ্গে হবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বলও। কীভাবে পাবেন? চলুন জেনে নেয়া যাক-
কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিঃ
চুল পড়া কমানোর জন্য এবং পাতলা চুল ঘন করা যায় খুবই সহজলভ্য কিছু ঘরোয়া উপাদান আপনি ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো সবসময় হাতের কাছেই পাওয়া যায় তাই আপনি যখন খুশি ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে চলুন এমন ৯ টি প্রাকৃতিক উপাদান দেখে নেওয়া যাক যেগুলো পাতলা চুল ঘন করার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী।
১. অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীঃ
অ্যালোভেরা স্ক্যাপ্ল-এর মৃত কোষ মেরামত করে চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এটি চুলে ভলিউম এনে দেয়।
পদ্ধতিঃ একটি পাতা থেকে অ্যালোভেরা জেলটি বের করে নিন এবং মাথার স্ক্যাপ্ল-এ ভালো করে ঘষে ঘষে লাগিয়ে রাখুন প্রায় ১০-১৫ মিনিট। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। পাতা থেকে জেল সংগ্রহ করার সুযোগ না থাকলে অ্যালোভেরা জেল কিনে নিতে পারেন।
ডিমে আছে প্রোটিন এবং সালফার যা চুলকে ভেতর থেকে মজবুত করে এবং চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করার পাশাপাশি চুলকে করে তোলে ঝলমলে ও সিল্কি। আর ডিমের সাথে থাকা অলিভ অয়েলও চুল ঘন ও সিল্কি করতে বিশেষভাবে কার্যকরী।
পদ্ধতিঃ একটি বাটিতে একটি ডিম ভেঙে নিন। এবার এর সাথে যোগ করুন ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল। ভালোভাবে মিশিয়ে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। ৩০-৪০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলুন।
আমলকীতে আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস এবং ভিটামিন সি, যা চুলের স্বাস্থ্য সুন্দর রাখে এবং চুলের গোড়ায় কোলাজেন-এর মাত্রা বৃদ্ধি করে চুল বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। লেবুর রস চুলের খুশকি দূর করে এবং আমলকী গুঁড়ার সাথে যুক্ত হয়ে চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। মধু চুলে নারিশমেন্ট প্রোভাইড করে ।
পদ্ধতিঃ ১ টেবিল চামচ আমলকী গুঁড়ার সাথে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এতে টকদই মিশিয়ে নিলে সেটা চুলের জন্য আরও বেনিফিসিয়াল হবে। চুল ড্রাই ও ড্যামেজ হলে মধুও অ্যাড করা যেতে পারে। ভালোভাবে মিশ্রণ তৈরি করে এবার এটি চুলে লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যাম্পু করে নিন এবং নরমাল পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
চুলের স্বাস্থ্য বজায় রেখে চুলের বৃদ্ধির জন্য মেথি একটি শ্রেষ্ঠ উপকরণ। এটি স্ক্যাল্প-এর প্রদাহ দূর করে, খুশকি তাড়ায় এবং চুল মজবুত করে।
পদ্ধতিঃ ২ টেবিল চামচ মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ভিজিয়ে রাখা মেথি দানা ছেঁকে নিয়ে এর সাথে হাফ কাপ পরিষ্কার পানি যোগ করে ব্লেন্ডার-এ মসৃণভাবে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এই পেস্টটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। তারপর শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে নিন ।
৫.মেহেদিঃ
পাতলা চুল ঘন করা যায় মেহেদির ছোঁয়াতে। মেহেদি চুলের আদর্শ খাদ্য। এটি চুলকে ভেতর থেকে মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এখন মার্কেটে হেনা প্যাক কিনতে পাওয়া যায়, তাই মেহেদি পাতা বাটাবাটির ঝামেলা এড়াতে সেটাও ইউজ করতে পারেন।
পদ্ধতিঃ মেহেদি পাতা অল্প পানি দিয়ে বেটে নিন। আপনি চাইলে এর সাথে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল যোগ করতে পারেন। এবার এটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল আবৃত করে রাখুন ৩০-৩৫ মিনিট।তারপর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।প্যাকটি মাসে ২/৩ বার ব্যবহার করতে পারেন।
৬. পেঁয়াজঃ
আপনি জানেন কী পেঁয়াজের তেল আপনার চুলের ঘনত্বটা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
পদ্ধতিঃ দুটো পেঁয়াজ, তিন-চার কোয়া রসুন কুচি করে কেটে নিন, সেটি নারকেল তেলে সাথে মিশিয়ে গরম করুন।যতক্ষণ না পর্যন্ত পেঁয়াজ রঙ বাদামী হছে ততক্ষণ নাড়তে থাকুন। তারপর সেই গরম তেলটি মাথায় মাসাজ করুন ১০-১৫ মিনিট ধরে,ঘণ্টা খাণেক রেখে ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন।
৭.ক্যাস্টর অয়েলঃ
এটির বহু গুণ, এটি স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের গোড়া মজবুত করে, এই অয়েলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও প্রোট্রিন যা চুলের গোড়া মুজবুত করে ও চুলের ঘনত্ব বাড়ায়।
পদ্ধতিঃ ক্যাস্টর অয়েলের সাথে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে চুলের স্ক্যাল্পে ভাল করে মাসাজ করুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট (রাতে শোয়ার আগে), সকালে ঘুম থেকে উঠে শ্যাম্পু করে নিন।
এছাড়াও খাবারদাবারে যথেষ্ট পুষ্টি না থাকলে তার প্রভাব চুলে পড়বেই। ডিম, মাছ, দুধ, দই বা ছানা , কমলালেবু, স্ট্রবেরি, পেয়ারা নিয়মিত খেতে হবে। ব্রোকোলি, পালং, বাঁধাকপির মতো সবুজ শাকসবজি চুলের কেরাটিন মজবুত করে চুল ঘন করে ।
December 12, 2021/ by Erona Moumita
Department of ICE (BAUET).
Facebook: https://www.facebook.com/erona.moumita.9/
তথ্যসূত্রঃ